টেবিল টেনিসের বোর্ড থেকে অভিনয়ের জগতে ইরাবতীর অভ্র ওরফে প্রারব্ধি
স্বপ্ন ছিল বড় টেবিল টেনিস খেলোয়াড় হবেন। সেইমতোই এগোচ্ছিলেন। ছোট থেকে খেলাই ছিল তাঁর সব। কিন্তু একটি ঘটনা মোড় ঘুরিয়ে দেয় তাঁর জীবনের। ছাড়তে হয় খেলা। কী সেই ঘটনা? সেই সবকিছু নিয়ে কলকাতা গ্লিটজের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় 'ইরাবতীর চুপকথার' অভ্র ওরফে প্রারব্ধি সিংহ।
গ্লিটজ- অভিনয়ের শুরুটা কীভাবে হয়েছিল?
প্রারব্ধি- আমার পরিবার সম্পূর্ণ খেলার জগতের। আমিও ছোট থেকে টেবিল টেনিস খেলতাম। আমার স্কুলের পাশাপাশি নদীয়া জেলায় টানা চ্যাম্পিয়ন হই টেবিল টেনিসে। যেহেতু খেলা নিয়েই সারাদিন ব্যস্ত থাকতাম তাই স্কুলে সেরকম যেতে হত না। আর তাছাড়া আমি পড়াশোনায় খুব একটা ভালো ছিলাম না। খেলাই আমার সব ছিল। এভাবেই চলছিল। কিন্তু ক্লাস টেন-এ পড়ার সময় চিটফান্ড কান্ডে বাবার প্রচুর টাকা চলে যায়। ওই সময় আমায় খেলাটা ছাড়তে হয়। তখন থেকেই ভাবতাম কি করব। আয়নায় নিজেকে দেখতে ভালো লাগতো, তাই ভাবলাম অভিনয়টা চেষ্টা করি। একটা অভিনয় শেখার স্কুলে ভর্তি হই। যদিও কোর্সটা পুরো করিনি। তখন ক্লাস টুয়েলভে পড়ি। আকাশ আটের অফিসে গিয়ে ফটো দিয়ে আসি। ওরা ফোন করে। 'স্বপ্ন দেখে মন' নামক সিরিয়ালে একটি ছোট রোল করি। তারপর 'মা সারদা' সিরিয়ালে কাজ পাই। পাশাপাশি থিয়েটার করতে থাকি। রানাঘাট থেকে রোজ যাতায়াত করতাম। এরপর 'আশালতা' সিরিয়ালে মল্লার চরিত্রটার জন্য অফার পাই সান বাংলা থেকে। এভাবেই শুরুটা হয়েছিল।
গ্লিটজ- ইরাবতীর চুপকথার অফারটা কীভাবে পেলে?
প্রারব্ধি- অনেক জায়গা থেকে লুক টেস্টের জন্য ডাকা হয়। অ্যাক্রোপলিসের ইপি পায়েল দিকেও মেসেজ করি কাজের জন্য। তারপর অ্যাক্রোপলিস থেকে ওরা ডাকে ধ্রুবতারা সিরিয়ালের জন্য। কিন্তু লুক টেস্টের পর আমাকে অনেক ছোট লাগছিল বলে ওটা হয়নি। যেহেতু ওদের সঙ্গে চেনাজানা হয়ে গিয়েছিল, তখন ওরাই বলে ইরাবতীর ছেলের চরিত্রটা করতে।
গ্লিটজ- অভিনয়ে আসা নিয়ে বাড়ি থেকে আপত্তি ছিল?
প্রারব্ধি- না বাড়ি থেকে কেউ কখনও আপত্তি করেনি। বাবা চাইত আমি আর আমার দাদা দুজনেই পড়াশোনা করে চাকরি করি। কিন্তু আমার অভিনয় করার ইচ্ছে শুনে কখনও আপত্তি করেনি।
গ্লিটজ- অভিনয়ের পাশাপাশি এই মুহূর্তে কিছু করছ?
প্রারব্ধি- অভিনয়ের পাশাপাশি এই মুহূর্তে আপাতত কিছু করছি না। গত বছর সেকেন্ড ইয়ারের পরীক্ষাটা দিতে পারিনি। ইচ্ছে আছে ডিস্ট্যান্সে আবার পড়াশোনাটা শুরু করার।
গ্লিটজ- এখন তো শ্যুটিং বন্ধ, কীভাবে সময় কাটাচ্ছ?
প্রারব্ধি- কাজের জন্য এখন কলকাতাতেই থাকতে হয়। লকডাউনের সময় থেকে রানাঘাটে থাকছি। তাই ফ্যামিলির সঙ্গে সময় কাটাতে পারছি। তাছাড়া রানাঘাটে 'উড়ান' নামে একটি NGO-এর সঙ্গে আমি যুক্ত। ওখানেও কাজ করছিলাম। তাছাড়া ঘুড়ি ওড়ানো, বাড়িতে Gym করা। বই পড়ার খুব একটা নেশা নেই, তবু চেষ্টা করছি বই পড়ার।
গ্লিটজ- লকডাউন উঠে গেলে সবার প্রথমে কোন কাজটা করবে?
প্রারব্ধি- লকডাউন উঠলেই সবার আগে শপিং করতে যাব। তারপর কলকাতায় ফিরব, কারণ ইরাবতীর শ্যুটিং আবার শুরু হবে। কাজে ফিরব।
No comments