ডুমুরের ফুল দেখতে পেয়েছিলেন রানী রাসমণি
দরিদ্র মাহিষ্য বংশে জন্ম সেই রমণীর। কিন্তু তাঁর জন্মানোর আগে তাঁর জননী দেখেছিলেন এক আশ্চর্য স্বপ্ন। বৃন্দাবনের কুঞ্জবন। সেখানে শ্রী কৃষ্ণকে ঘিরে নৃত্য করছে ষোড়শ গোপিনী। তাঁদের মধ্যে এক অপরূপ লাবণ্যময়ী গোপবালিকা নৃত্য করতে করতে তাঁর কোলে এসে বসলো। এরপর ধীরে ধীরে তাঁর মধ্যে মিশে গেলো। এর পরেই রাসমণির জন্ম। ছোটবেলায় সখীদের সঙ্গে খেলতে খেলতে মেয়েটি দেখতে পেয়েছিলো ডুমুরের গাছে কয়েকটি ফুল ফুটে রয়েছে। সে প্রথমটায় একটু অবাক হলো। কারণ সে জানতো যে ডুমুরের ফুল দেখা যায় না। তবুও সহচরীদেরকে একথা এসে জানালো সে সরল মনেই। কেউ তার কথা বিশ্বাস তো করলেই না। উপরন্তু তাকে মিথ্যেবাদী আখ্যা দেয়া হলো।
মনের দুঃখে মায়ের কাছে এসে জানালো সেই মেয়েটি। মনের দুঃখ আর গোপন করতে পারলো না। বিশ্বাস করো মা। আমি একটুও মিথ্যে বলছিনা। আমি সত্যি ডুমুরের ফুল দেখেছি। মেয়ের কথা বিশ্বাস করে মা আশীর্বাদ করেছিলেন তাকে। হ্যাঁ মা আমি জানি , তুমি কখনো মিথ্যে বল না। তুমি একদিন রাজরানী হবে। মায়ের আশীর্বাদ সফল হয়েছিল। দরিদ্র ঘরের সেই মেয়ে শুধু স্বামীর ঘরের রানী হন নি , হয়েছিলেন বাংলার রানী রাসমণি। মা ভবতারিনীর মন্দিরে গিয়ে মামলা মোকদ্দমার কথা চিন্তা করছিলেন বলে ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেব সজোরে চপেটাঘাত করেছিলেন তাঁর গন্ডে , এখানেও এই চিন্তা ! সেই ঠাকুর রামকৃষ্ণ রাসমণির প্রয়াণের সংবাদ পেয়ে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। ভাগ্নে হৃদয়কে বলেছিলেন , অষ্ট সতীর এক সতী চলে গেল।
লিখলেন- ময়ুমী গুপ্ত
No comments