শবরের অপেক্ষায় থাকবে বাঙালি
বাঙালির ২০১৪ সালটা শেষ হয়েছিল গোয়েন্দা ছবি দিয়ে, আবার নতুন বছরের শুরু হল গোয়েন্দা ছবি দিয়ে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের 'ঋণ' গল্পের অবলম্বনে অরিন্দম শীলের 'এবার শবর'। ফেলুদা , ব্যোমকেশ থেকে বেরিয়ে অন্য ধরনের ডিটেকটিভ চরিত্র শবর দাশগুপ্ত। বাকি দুজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ, কিন্তু শবর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন। বাকি দুজনের থেকে একদমই অচেনা। যে কিনা একাধারে নির্মম, বাস্তববাদী, মজার আবার আবেগপ্রবণও। এমন একটি চরিত্রকে দুর্দান্ত ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন শ্বাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। এই চরিত্রটির জন্য তিনিই যে একেবারে পারফেক্ট ছিলেন, তা প্রমাণ করে দিয়েছেন এই মুহূর্তে বাংলার অন্যতম সেরা এই অভিনেতা।
গল্পের শুরু থেকে শেষ অবধি ছিল টানটান উত্তেজনা।প্রতি মুহূর্তেই মনে হবে কে ? কখন ? কিভাবে ? মিতালি ঘোষ (স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়) নামক এক তরুনীর মৃত্যু দিয়ে গল্পের শুরু। কে খুনি ? সন্দেহের তালিকা থেকে মিতালির দুজন প্রাক্তন স্বামী, বোন, ছোটবেলার বন্ধু থেকে বাদ যায়নি কেউই। তবে খুনি কে তার জন্য অপেক্ষা করে থাকতেই হবে ছবির শেষ অবধি। কারণ প্রতি মুহুর্তেই রয়েছে নতুন চমক।
ক্যামেরা ও ছবির প্রতিটা চরিত্রের কাজ দুর্দান্ত। শ্বাশ্বতর পরই আসে ঋত্তিক চক্রবর্তীর অভিনয়। পান্তু হালদারকে একেবারে প্রানবন্ত করে তুলতে সফল ঋত্তিক। আরো একজনের কথা না বললেই নয়। শুরুতেই খুন হয়ে গেলেও সমস্ত গল্পটি ঘুরেছে তাঁকে ঘিরেই। তিনি মিতালি ঘোষ ওরফে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। নতুন লুকে একেবারে মানানসই স্বস্তিকা। প্রতিটা সিনের প্রতিটা এক্সপ্রেশন অনবদ্য। শুধু রহস্য নয় রয়েছে প্রেম,ভালবাসা,কমেডি সবটাই। বিশেষ করে রাহুল-দেবলীনার ঝগড়ার দৃশ্যটি ছিল অসাধারণ। হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যেতে বাধ্য দর্শকদের। সন্তু মুখোপাধ্যায়, দীপঙ্কর দে , জুন মালিয়া, পায়েল সরকার, আবির চট্টোপাধ্যায় সকলেই যথাযথ। তবে শেষ সিনটির বোধ হয় খুব একটা প্রয়োজন ছিল না। গোয়েন্দা ছবিতে মিউজিকের একটা বড় ভূমিকা থাকে। কিন্তু বিক্রম ঘোষের মিউজিক সেভাবে দাগ কাটতে পারেনি।
তবে অরিন্দম শীলের 'এবার শবর' জায়গা করে নিয়েছে বাঙালির মনে। এমনকি ফেলুদা, ব্যোমকেশের মত শবরের অভিযানের সঙ্গী হতে প্রহর গোনা শুরু করে দিয়েছে বাঙালি। শ্বাশ্বতর মতো 'এমনি বললাম' কিন্তু একেবারেই নয়। বরং এমনটাই বলছেন হল ফেরত দর্শকরা।
খুব ভালো
লিখলেন সুমি মিত্র